Monday, February 13, 2017

ভালবাসা দিবসের শুভেচ্ছা।

সময়ের প্রেম যখন চলে দামি রেস্তোরার  আবদ্ধ চারদেয়ালে,
আউট ডোরে ফটোশুট কিংবা রাতের হ্যাং-আউটের জলসায়!
লংড্রাইবে বের হয়ে চেইক-ইন দেওয়ার মত আধুনিকতায়-

সেখানে তোমার আমার প্রেম যেন
বিলুপ্ত একখানা সরকারী পোস্ট অফিসের মতন।
যাকে ব্যাবহারের প্রয়োজন যেমন কারো নেই
তেমনি, আমাকেও তোমার প্রয়োজন পরেনা আজকাল।

মরচে পরা অব্যবহৃত একজন ডাক পিয়নের কার্বন কপি আমি,
হয়ত সবার মত লাল,নীল নোটের বান্ডেল ভর্তি পকেট নেই আমার!
কফি হাউজে আর বিদেশী রেস্তোরার ওজন বহন করার ক্ষমতা নেই!
তবু, আর সবার থেকে আমিও ভাল কম বাসিনি তোমায়।

জম্নদিনে দামি অলঙ্কার দিয়ে তোমার খুশি করাতে না পারলেও
খালি গলায় তোমার প্রিয় দুটি লাইন শোনাতে পারি বন্ধ চোখে।
ভালবাসা দিবসে ধারকরা টাকা দিয়ে তোমায় নিয়ে রিক্সায় ঘুরতে পারি,
শাহাবাগের একটি তাজা গোলাপ দিয়ে তোমায় শুভেচ্ছা জানাতে পারি।

আর বড়জোর শত লাইনের প্রেমের ছন্দ মাখা দুটো কবিতা
তোমার নামে উতসর্গ করে স্বত্বাধিকারী করে দিতে পারি তোমায়।
এর চেয়ে বেশি কিছু দেওয়ার সাধ্য আমার নেই প্রিয়তম।
প্রাচুর্য্যকে ভালবেসে যদি সুখি হতে পার! তবে সুখি হও...

০২ ফালগুণ ১৪২৩ বঙ্গাব্দ।

Monday, August 8, 2016

ব্যাধি

কৌতূহলী এ প্রান হরহামেশাই জানতে চায় আসলে মানব জীবনে ছবি, ফটোগ্রাফ বা তৈলচিত্র বা তার বিকৃত সংস্করণ কুলফি তোলার উদ্দেশ্যটা কি! আদৌ কোন উদ্দেশ্য আছে কি!!!হ্যাঁ আছে বৈকি! ছবি ই পৃথিবীতে একমাত্র বস্তু যার মাধ্যমে আমরা কোন মুহূর্ত চিরদিনের জন্য একটা জায়গায় আটকে দিতে সক্ষম। সুন্দর কোন মুহূর্তের মূর্ত প্রতিচ্ছবি যা হয়তো আর কোনদিনও ফিরে পাবার নয় সে মাহেন্দ্রক্ষণ কে আটকে দেবার এক অভিনব মাধ্যম।
কিন্তু আসলেই কথায় আছে কোন জিনিস ই অতিরিক্ত ভালনা। কোন কাজ যখন স্বাভাবিকতার মাত্রা অতিক্রম করে তখন আমরা তাকে আদিখ্যেতা বলি, আর যদি আদিখ্যেতার মাত্রাও অতিক্রান্ত হয় তখন তা হয় মস্তিষ্ক বিকৃতি।
ফেবু তে ছবি আপলোডের ব্যাপারটা ভালই লাগে,বন্ধুর সাথে, পরিবারের সাথে, প্রেমিক প্রেমিকার সাথে কোন মুহূর্ত থেমে থাকার অভিনব কায়দা দেখলে মনেহয় কাল্পনিক জগতে হলেও সম্পর্ক জিনিসটা হয়তো টিকে আছে পৃথিবীতে এখনো। সুখের কিছু মুহূর্ত যা হয়তো আর কখনই ফিরে আসার নয়। ভালই লাগে দেখতে আপন মানুষটার পাশে দাড়িয়ে ক্যামেরাবন্দি কোন মুহূর্তের আলিঙ্গন যেখানে সবার চোখের কিনারায় ভালবাসার ঘিয়ে ভাজা আনন্দের প্রলেপ দেখা যায়।
কিন্তু কিছু মানুষ সুন্দর সে মুহূর্তগুলোকে আদিখ্যেতার মাত্রাও ছাড়িয়ে মস্তিস্ক বিকৃতির পর্যায়ে নিয়ে গেছে। বন্ধুবান্ধব, পরিবার বা প্রেমিকা তাদের কে না ভালবাসে! তাই বলে দাত কেলিয়ে, থোতা বাকিয়ে, কুলফি মারিয়ে দিনে ১০ বার তাদের নিয়ে ছবি আপলোড করার অর্থ কি!! কোন উৎসব-অনুষ্ঠান ছাড়াই প্রায় প্রতিটি দিন প্রেমিকার, বন্ধুদের সাথে অমুক রেস্টুরেন্টে, তমুক পার্কে, কোন বালের মায়ের বিয়ার দাওয়াতে ছবি তুলে হ্যাশ ট্যাগ
#‎ghuri
#‎hat_dhori
#‎bal_falai
#‎or_pajamar_color_nil
#‎amar_sando_genjir_rong_golapi
আমরা এসবের মাধ্যমে আসলে প্রমান টা কি করতে চাচ্ছি!আমরা কি আমাদের আপন মানুষগুলোকে তাদের চেয়ে বেশি ভালবাসি যারা হাজারো ছবি দিয়ে নিজেদের সম্পর্কগুলোর মার্কেটিং করছেনা!!এই অতিমাত্রায় ছবি আপলোড এর ব্যাধিতে আক্রান্ত লোকেদের স্বভাবের সাথে ভাদ্র মাসের কুকুরের মননের সামঞ্জস্য বিদ্যমান।কুকুর ও ঐ সময়টায় অধিকাংশ সঙ্গম লোকসম্মুখেই করে থাকে। আরেকটা কথা এ ধরনের আদিখ্যেতার চর্চা আমি তাদের মাঝেই বেশি দেখি যাদের ভাদ্র মাসের কুকুরের মত সঙ্গী, বন্ধুবান্ধব সময়ভেদে পরিবর্তনের প্রবনতা বেশি। একই প্রোফাইল এ তাদেরকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন মেয়ে ছেলেকে প্রেমিক প্রেমিকা বানিয়ে এটা ওটা ধরে ছবি তুলে আপলোড করতে দেখেছি, যে মানুষ আজ দাত কেলিয়ে একজনের সাথে হাজারো ছবি আপলোড করল কিছুদিন পর তাদেরকেই ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতম স্বার্থে পরস্পরের সাথে কুকুরের মত আচরন করতে দেখেছি। হয়তবা আমার পর্যবেক্ষণে দুস্তর ভুল রয়ে গেছে যে এ সকল মানুষকে আমি মস্তিস্ক বিকৃত বলছি, সমাজবিজ্ঞানী না হলেও এটুকু বুঝি সম্পর্ক সে তো তো আত্মার সমন্বয়,বৈশাখী মেলায় বিক্রিযোগ্য কোন পণ্য নয় যার গভীরতা প্রমান করতে গিয়ে বাবা-মা, বন্ধুবান্ধব, প্রেমিকার সাথে হাজারো ছবি আপলোড দিতেহবে ।ক্ষমা করবেন কাউকে আঘাত দিয়ে থাকলে।


আজিজুল দিনার

অমানুশ যখন মানুশ

ওরা আমায় আহত করে,
কথায় কথায় গুলি ছুড়ে-
এলপাতারি লাঠি মেরে
ওরা আমায় রক্তাত করে।
ক্ষত-বিক্ষত আমার শরীরে
ওরা শান্তির কলাম লিখে
ওরা নাকি শান্তি প্রতিষ্ঠা করে।
আমায় ঢেকে ওরা উল্লাস করে
জয় ধ্বনিতে মুখরিত হয় সময়
যখন ওরা আমায় হত্যা করে।
ওরা আল্লাহ- খোদা মানেনা
শান্তি চিনেনা- বন্ধুত জানেনা!
ওরা মা চিনেনা ভাই মানেনা
ওরা রক্তের নেশায় অন্ধ মাতাল।
ওরা হাজার লক্ষ প্রান বিনাশ করে
খোদার লিখিত কালাম লঙ্ঘন করে
ওরা নিষ্পাপ মানুষ হত্যা করে
আগুনে পুড়িয়ে ছাই করে নিরিহ।
তবে কি, ওদের বাধা দেবার নেই কেহ?
তবে কি, ওরা কোন সতি মায়ের সন্তান নয়?
তবে কি, ওরা হিংস্র জঙ্গলি হায়নার দল?
তবে কি, বনের কোন পশু তাদের জন্ম জননী?

 ৩১-০৭-২০১৬

Sunday, December 13, 2015

বাংলার নিশান।



সবুজের বুক চিরে মেঠো রাস্তার পথ ধরে
শক্ত হাতে ঘুরে বেড়ানো ঐ কিশোর থেকে বৃদ্ধা
আউল থেকে বাউল, সাংবাদিক অথাবা বুদ্ধিজীবী
সংগ্রামী নেতা কিংবা পঙ্গু কোন মুক্তি সেনা, এমনকি
পাঁচ তারকা হোটেলে শুয়ে থাকা ঐ মোটা ব্যবসায়ি,
রাস্তার পাশে পরে থাকা ডাস্টবিনের খাবার কুড়িয়ে
খাওয়া ঐ ছোট্ট শিশু থেকে শুরু করে রাতের আধারে
পার্কের ঝোপের মাঝে দেহ বিক্রি করা ঐ পতিতা
এমনকি, তাকে স্বপ্ন দেখিয়ে নিয়ে আসা দালাল থেকে
খদ্দের ঐ বুড়ো মাতাল, রিক্সা-ভ্যান ও ঠেলা-ওয়ালা
আমি সবার মাঝেই বিরাজমান, দুটি রঙ্গে বিদ্যমান।
  
হিমালয়ের আকাশ চুম্বী চুড়া থেকে মেঘের উচু ভেলায়
নবান্নের উৎসব থেকে কৃষকের বৈশাখী মেলায়
কবিদের চটের ব্যগ ভর্তি লেখা দিস্তা দিস্তা কাগজে
কিংবা কোন সাহিত্যিকের কলমের কালো কালিতে
শিল্পীর পুরনো ক্যানভাসের রঙ তুলির আচরে
অথবা লেগে থাকা কোন ছাত্রের গায়ের টি-শার্টে,
সাদা শাড়ী পরিহিত বধূ, কিংবা সন্তান হারা মা,
বখে যাওয়া অবাধ্য নেশাগ্রস্ত মেধাবী যুবক, এমনকি
পার্কের অথবা রাজপথের ছোট ছোট প্রেমিক যুগল-
সাদা আর কালো কিংবা হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান
রাজনৈতিক, অরাজনৈতিক, দলীয়, নির্দলীয় নির্বিশেষে সবাই
আমি সবার’ই মাঝেই বিরাজমান,

আমি হাজারও রকমের, হাজারও পেশায় কোটি মানুষের
একি রক্তের রঙের ভীরে লাখো শহীদের রক্তে অর্জিত  
সবুজের বুক চিড়ে ভেসে থাকা লাল জয় বাংলা,
আমি বাংলার নিশান।


               

Rayhan Rabby
০৩ ডিসেম্বর ২০১৫


Wednesday, February 25, 2015

শব যাত্রা...

প্রচণ্ড জোরে একটা ধাক্কা লাগল পেছন থেকে তার পর থেকে সব কিছু অন্ধকার। নিরবতা কাটিয়ে হঠাৎ একটা শব্দ কানে ভেসে আসছে ছুটির ঘন্টার মত... অন্ধকারের মাঝে চোখের সামনে এক ঝাপটা্ আলো চোখে পড়তেই দেখলাম,
হন্যে হয়ে ছুটছি সবার সাথে, কে আগে পৌছোতে পারে। এইত সেই দিনের কাহিনী কত ছোট ছিলাম আমি, স্কুল শেষ করে বাসায় এসে ব্যাগ ছুঁড়ে দিয়ে খেলার মাঠে দৌড়...পেছনে ফিরে তাকানোর মত সময় ও ছিলনা,
লাফা-লাফি খেলা ধুলার মধ্যদিয়ে কেটে গেছে শৈশবটা। ঘড়ির কাটা ঘুরছে, দিন শেষে রাত্রির আবর্তন হচ্ছে সাথে সাথে আমি বড় হতে থাকলাম প্রকৃতির এই বাধাই করা নিয়মের ভিতর দিয়ে। বড় হচ্ছি সব কিছু বুঝতে শিখছি, সাথে সাথে জ্ঞানের বোঝাও ভারি করছি, স্কুল এর ড্রেস বাদ দিয়ে কলেজ ড্রেস গায়ে দিব। আরে এইত দেখা যাচ্ছে নতুন ড্রেস পরে কলেজের প্রথম দিনের সেই পুরনো স্মৃতি গুলো। কলেজের সামনে দাড়িয়ে মেয়েদের সাথে ফাজলামি করা, একসাথে সবাই বসে দুপুর থেকে সন্ধা পর্যন্ত চায়ের দোকানে আড্ডা দেয়া। রাতে বাসায় ফিরে গিয়ে রাতভর প্রিয় মানুষের সাথে ফোনালাপ, বন্ধুদের সাথে করে ঘুরে ভেড়ানো আড্ডা আর গানে এর মাঝেও কেটে গেল কলেজ লাইফটা, হায় হায় কাজের কাজ কিছুই হলনা।
চোখের সামনে এখন সব কিছুই স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে, জীবনের প্রতিটা সেকেন্ড প্রতিটা মুহূর্তের কেটে যাওয়া সময় গুলো স্পস্ট ভাবেই দেখতে পাচ্ছি এখন আমি। এই সেদিন সবার সাথে ঈদের নামাজ পরার পরে সবার সাথে আলিঙ্গনের সেই মধুর মুহূর্ত গুলো দেখছি, কত শান্তি পাচ্ছি দেখে, নামাজ শেষে মায়ের পা ধরে সালাম করার করার সেই মুহূর্তটা কত মধুর দেখাচ্ছে, বাবার সাথে এক সাথে জুম্মা নামাজ পড়ার সময়কার সেই দৃশ্য, কত শান্তিই না পাচ্ছি দেখে,
জীবনের সব সময়ের মধ্যে এই কিছু সময় গুলোকে দেখতেই শান্তি লাগছে বেশি আর সকল মধুর স্মৃতি গুলো দেখে বড্ড আফসোস হচ্ছে, কিছুক্ষণ আগেতো কত আনন্দময় সময় কেটেছে, বন্ধুদের সাথে রাতভর পার্টি করে মনের সুখে ড্রাইভ করে ঘরে ফিরছিলাম...তারপর হথাৎ" করে কিসের সাথে ধাক্কা লাগল,তারপর সব কিছু ঘুরতে লাগল...আমার চারিপাশ কেমন যেন নিথর হতে লাগল...আমাকে সাহায্য করার জন্য কেউ এগিয়ে আসেনি, এর মানে কি?আমার দেহ পরে আছে মেঝেতে আর আমি আমি হেটে বেড়াচ্ছি চারপাশে, আমি কি মারা গেছি? মানুষ মারা যাওয়ার সাথে সাথে নাকি তার পুরনো সব স্মৃতির আত্মার চোখের সামনে ভেসে বেড়ায়...তাহলে বোধয় আমি অনেক আগেই মরে গেছি। এখন যা দেখছি তা বাস্তবেই ঘটছে.... আমাকে জড়িয়ে ধরে সবাই কাঁদছে, আমাকে গোসল করানো হচ্ছে...সাদা নতুন কাপড় দিয়ে পুরো শরীর ঢেকে দেওয়া হয়েছে... বেঁচে থাকতে নতুন কাপড় পরতে কত আনন্দ লাগত...কিন্তু আজ আমার অনেক ভয় লাগছে। ক্রমশই সবাই সামনে এগিয়ে যাচ্ছে ততই আমার ভয় হচ্ছে। আমাকে তোমরা ঐ অন্ধকার ঘরে নিয়ে যেওনা, তোমাদের দোহাই লাগে...আমার কথা আজ কেউ শুনছে না, না বাবা শুনছে না আমার মা,বাই বন্ধু কেউ আজ আমায় শুনছে না। তারা সবাইতো আমার খাটিয়া কাদে বয়ে নিয়ে কবরে যাচ্ছে,কিন্তু আমিতো কিছুই নিয়ে যাচ্ছি না! এই পৃথিবীর সবাইকে আজ মূর্খ মনে হচ্ছে আমার, দুনিয়ার যে কাজের জন্য তাদের পাঠানো হয়েছে তারা তা না করে কি সব আজব কাজে ব্যাস্ত সবাই, ক্ষণিকের পৃথিবীর মায়া আজ তারা বিভ্রম। দেনা পাওনার হিসেব নিয়ে ব্যাস্ত এই মূর্খরা...মরদেহ টাকে কবরে নামানো হচ্ছে এখন সাথে সাথে আমার সময়ও শেষ হয়ে যাচ্ছে...ক্রমশই ডুবে যাচ্ছি অন্ধকারে, শুরু হতে যাচ্ছে নতুন করে আবার নতুন জীবন, যার কোন শেষ নেই...আমার কথা তোমাদের কানে না পৌছালেও যাবার আগেও বলছি সাবাই শোন "মৃত্যু মানে শেষ নয় মৃত্যু মানে শুরু"...

Rayhan Rabby
25-02-2015